শ্রদ্ধেয় শেখ কামাল ভাই আমাদের নেতা ও রাজনৈতিক শিক্ষা গুরু : ( পর্ব ৪)
১৯৭২ সালের শেষের দিকেই আমরা শেখ কামাল ভাইয়ের নির্দেশে আমাদের স্কুল শাখার সম্মেলনের আয়োজন করি। ইতিমধ্যে লালমাটিয়া গার্লস কলেজ শাখা ছাত্রলীগ ও গঠন করা হয়ে গেছে। সঙ্গত কারণেই স্কুল ও কলেজ এর সম্মেলন একসাথেই করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলো।
সম্মেলনে যদিও কলেজের নাম ও ছিলো তবুও বলতে গেলে সব প্রস্তুতির ভার পড়লো আমাদের কয়েক জনের উপর। আমরা মূলত কামাল ভাইয়ের নির্দেশনা মতো লালমাটিয়ার সৈয়দ সিরাজ উদ্দিন ভাই, রিয়াজ উদ্দিন ভাই, ডাবলু ভাই, মোস্তফা ভাই ( পরবর্তীতে এডভোকেট ) মাসুম, আমি ও পারভীন মিলে অক্লান্ত পরিশ্রমে একটি চমৎকার সফল সম্মেলন করতে পেরেছিলাম। কার্ড ছাপানো থেকে প্রধান অতিথি পর্যন্ত আমাদের কনফার্ম করতে হয়েছে। আমি, পারভীন, সিরাজভাই, রিয়াজ ভাই সহ খুব ভোরে মিন্টু রোডে গিয়ে নিশ্চিত করেছিলাম মালেক উকিল সাহেব কে।
সংগঠনে বয়সের তুলনায় আমরা মনে হয় বেশ পরিশ্রমী ও সক্রিয় ই ছিলাম সে সময়। আর্থিক সহযোগিতায় ছিলেন লালমাটিয়া আওয়ামী লীগের রমিজ উদ্দিন ভাই, কাটাসুরের হাই সাহেব, শঙ্করের নাছিরুল্লাহ সাহেব। যাদের নাম কৃতজ্ঞতা ভরে স্বরণ করছি।
আমাদের লালমাটিয়া গার্লস স্কুলের দক্ষিণ পূর্ব দেয়াল ঘেসেই ছিলো ছাত্রলীগের লালমাটিয়া শাখা অফিস। যেটি এখন লালমাটিয়া স্পুটিং ক্লাব। আমরা টিফিন টাইমে ওদিকটার নিচু দেয়াল টপকে চলে যেতাম ছাত্রলীগ অফিসে। সম্মেলন উপলক্ষে বিকেলে ছুটির পরে ঘন্টা খানেক চলতো আবৃত্তি ও গানের রিহার্সেল। আজকের প্রোথিত জশা রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী মিতা হক ছিলো শিল্পীদের মাঝে অন্যতম। মিতা এতো ছোট ছিল যে ওর নিজস্ব ছোট সাইজের হারমোনিয়াম বাজিয়ে গান করতো।
এছাড়াও ছিলো বন্ধু সাফিন সীমা, বন্ধু মির্জা বেবী , প্রিসিলা, সুইটি (পরবর্তীতে ফুটবলার টুটুলের বউ) বরকত ভাইয়ের বোন ( নামটি মনে করতে পারছিনা এই মুহূর্তে) সহ আরো অনেকে।
সেই সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মালেক উকিল। বিশেষ অতিথি ছাত্রলীগ সভাপতি শেখ শহিদুল ইসলাম, শেখ কামাল। নির্দিষ্ট দিলে লালমাটিয়া গার্লস কলেজের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হলো দিনব্যাপী সম্মেলন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
শেখ কামাল ভাই এমন একটি চমৎকার অনুষ্ঠান করতে পারার জন্য বিশেষভাবে আমাদের প্রশংসা করলেন। উনার নেতৃত্বে কাজ কাজ করতে পেরে আমরা আজও গৌরবান্বিত।
ইতিমধ্যেই ছাত্রলীগ অফিসে ও আমি পারভীন বেশ সুপরিচিত হয়ে গেলাম। সংগঠনে আমাদের সক্রিয়তার কারণে সবাই আমাদের পছন্দ ও স্নেহ করতেন। সিটি ছাত্রলীগে তখন উল্লেখযোগ্য ভূমিকায় ছিলেন প্রয়াত সৈয়দ নুরু, মমতাজ হোসেন, রউফ শিকদার, ইউনুস মিয়া, মোবারক হোসেন সেলিম, প্রয়াত শামীম আফজাল, কামাল মজুমদার, মহিবুল ইয়াজদানী খান ডাবলু, আবদুস সামাদ পিন্টু, জিগাতলার মুকুল ভাই, মাহবুব ভাই , মোহাম্মদপুরের পিয়ারু ভাই বাদল ভাই ইডেনের ফজিলাতুন নেসা আপা, আরজু আপা প্রমুখ।
চলবে......


