শ্রদ্ধেয় শেখ কামাল ভাই আমাদের নেতা ও রাজনৈতিক শিক্ষা গুরু : ( পর্ব ১)
https://www.facebook.com/nazma.a.kawsar
নিজেকে সৌভাগবান মনে করি কারণ, আমি শেখ কামাল এর হাতে গড়া কর্মী বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ধারক বাহক, ও হৃদয়ে লালন করি ধারণ করি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শ। ভালোবাসি আমার বাংলাদেশ কে।
সময়ের সাহসী সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল ছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর প্রথম ব্যাচের ক্যাডেট অফিসারদের একজন। ১৯৭১ সালের ৯ অক্টোবর তাঁদের পাসিং আউট হয়। এরপর সেকেন্ড লেফট্যানেন্ট হিসেবে শেখ কামাল, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এমএজি ওসমানীর এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মুক্তিযুদ্ধের শেষে কিছুদিন পর তিনি সেনাবাহিনী ত্যাগ করেন এবং পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র জীবনে ফিরে যান। সেখান থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
যিনি অস্র ছেড়ে কলম হাতে নিয়েছিলেন, হাতে তুলে নিয়েছিলেন প্রিয় "সেতার" টা আবার। গড়ে তুলেছিলেন "আবাহনী ক্রীড়াচক্র" যা এই বাংলাদেশের ক্রীড়া জগৎ কে করেছে সমৃদ্ধ, যুব সমাজকে করেছে ক্রীড়া পারদর্শী।
সদ্য স্বাধীন দেশ
ও জাতিকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ করতে যিনি নিরলস ছুটে
বেড়িয়েছেন স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে।
স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয়
চার মূলনীতি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও ধর্ম নিরপেক্ষতার মন্ত্রে
উজ্জীবিত করে নুতন দেশটিকে একটি আদর্শ সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার
অঙ্গীকারে নেমেছিলেন নুতন লড়াইয়ে।
ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্কুল কলেজে ছাত্র ছাত্রীদের ছাত্রলীগের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তিনি।
তারই ধারাবাহিকতায় তিনি তার প্রচারণা টিম নিয়ে এলেন ঢাকার
মোহাম্মদপুরের আমাদের " লালমাটিয়া গার্লস হাই স্কুলে।" গার্লস স্কুল বিধায়
তিনি সরাসরি স্কুলে না ঢুকে বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। সাথে উনার বন্ধু বরকত এ
খোদা সহ মোহাম্মদপুর ছাত্রলীগের বাদল ভাই, পিয়ারু ভাই, মহিবুল ইয়াজদানী
খান ডাবলু( বর্তমানে সুইডেন প্রবাসী) আব্দুস সামাদ পিন্টু ও লালমাটিয়া
ছাত্রলীগের সৈয়দ সিরাজুদ্দীন কে নিয়ে।
অথচ প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু পুত্র চাইলে যখন তখন স্কুলে ঢুকতে পারতেন। কিন্তু সেই ভদ্রতা ও সভ্যতার শিক্ষা উনার ছিলো প্রবল।
স্কুলের ভেতরে আসলেন উনার বিশ্ববিদ্যালয়ের টিমের রাশিদা খানম আপা ও
আব্দুল কুদ্দুস মাখন ভাবে স্ত্রী হাসু আপা সহ কয়েকজন। উনারা টিফিন টাইমে
আমাদের নিয়ে রাষ্ট্রীয় মূলনীতি, ছাত্র লীগের আদর্শ উদ্দেশ্য সম্পর্কে ও
সদ্য স্বাধীন দেশ গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে কাজ করার
বিষয়ে আমাদের বুঝালেন। আমরা কজন বেশ আগ্রহ নিয়ে উৎসাহী হলাম।
দু তিন
দিন উনারা আমাদের মোটামুটি প্রস্তুত করে, জানালেন হেড মিস্ট্রেস এর অনুমতি
নিয়ে একদিন শেখ কামাল ভাই আসবেন স্কুলে। আমরা সকল ছাত্রীদের কে জানিয়ে
দিলাম খবরটি। সবার মধ্যেই বেশ উৎসাহ উদ্দীপনা প্রধানমন্ত্রী পুত্র
মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল কে দেখার ও শুনার।
অবশেষে ১৯৭২ সালের মাঝামাঝি রৌদ্র স্নাত এক দুপুরে তিনি এলেন এবং জয় করলেন সবার হৃদয়। হালকা পাতলা লম্বা সুদর্শন যুবক। অতি সাধারণ কিন্তু সবার থেকে আলাদা। দেখতে ঠিক বঙ্গবন্ধুর যুবক বয়সের ছবির মতোই অবিকল। কালো ফ্রেমের চশমা ঘন মোটা মোচ, উজ্জ্বল বুদ্ধিদৃপ্ত দুচোখের হাস্যোজ্জ্বল চাহনী। জীবনে প্রথম আমরা দেখলাম শেখ কামাল কে।
যিনি ছিলেন আপাদমস্তক একজন দক্ষ সংগঠক ও আদর্শ দেশপ্রেমিক। তিনি বললেন বোঝালেন ব্যাখ্যা করলেন দেশের প্রতি আমাদের দায়িত্ব কর্তব্য ও বর্তমান প্রেক্ষাপটে ছাত্রলীগের আদর্শ উদ্দেশ্য।নিজেদের কে একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা।
আমরা ছাত্রীরা মুগ্ধ বিমোহিত হলাম উনার বক্তব্যে, দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হলাম। নিজেদের মনে হচ্ছিল আমরাই এক এক জন নুতন দেশ গড়ার লড়াইয়ের বীর সৈনিক!
তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে আমাকে সভাপতি ও পারভীন সুলতানা কে সাধারণ সম্পাদক করে লালমাটিয়া গার্লস স্কুল শাখা ছাত্রলীগ এর সংক্ষিপ্ত কমিটি গঠন করা হলো।
চলবে.....
